করোনা ভাইরাস ঠেকাতে চীনের নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিতের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-তাইওয়ান সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। স্বতন্ত্র রাষ্ট্র দাবি করা তাইওয়ান পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জোয়ান অউ গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন , উহানের করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সমপ্রতি বাংলাদেশ সরকার চীনা নাগরিকদের ওপর যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তার শিকার হচ্ছেন তাইওয়ানের নাগরিকরাও। যা নিন্দনীয়। চীনের সঙ্গে মিলিয়ে তাইওয়ানের নাগরিকদের বাংলাদেশে অন-এরাইভাল ভিসায় যে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা প্রত্যাহারে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ এবং এ বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও দাবি করে তাইপে। চ্যানেল নিউজ এশিয়ার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ফোকাস তাইওয়ান। ঢাকার তরফে এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য নেই। তবে পররাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকরা বলছেন, তাইওয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। যা আছে তা হলো বাণিজ্যিক সম্পর্ক।
তাছাড়া বাংলাদেশ ওয়ান চায়না বা এক চীন নীতিতে বিশ্বাসী। তাইওয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোয়ান অউ মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন-রোববার চীনা নাগরিকদের ‘অন-এরাইভাল’ ভিসা স্থগিতের ঘোষণার পর বেশ কয়েকজন তাইওয়ানিজ নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
তার দাবি বিষয়টি জানার পর ঢাকাস্থ তাইওয়ান ট্রেড সেন্টার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে যে, হংকং, ম্যাকাউ ও তাইওয়ানের নাগরিকদের ওপরও অভিন্ন নিষেধাজ্ঞাটি জারি রয়েছে। অউ বলেন, ভারতে তাইওয়ানের প্রতিনিধি কার্যালয় বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের নজরে এনেছে। তারা বাংলাদেশ সরকারকে বলেছে, তাইওয়ান চীনের অংশ নয়। তাইওয়ানের নাগরিকদের এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করা ঠিক নয়। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতে অবস্থিত প্রতিনিধি কার্যালয় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে। যাতে করে, তাইওয়ানের নাগরিকদের ওপর থেকে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। উল্লেখ্য, রাষ্ট্র হিসাবে তাইওয়ানে বৈশ্বিক স্বীকৃতি এখনও নেই। তবে তাদের স্বাতন্ত্রতাকে স্বীকার করে জাতিসংঘের সদস্য ১৪টি রাষ্ট্র। যার মধ্যে ভ্যাটিকানও রয়েছে। তাইওয়ান পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েব পোর্টালে প্রচারিত তথ্য মতে, ৪৭টি দেশের সঙ্গে তাদের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশেও তাদের ট্রেড অফিস ছিলো, তবে তা ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে গেছে। ভারতে থাকা তাইওয়ানের ট্রেড অফিস বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি দেখভাল করে।
321 total views, 1 views today